মূল বিষয়ে যান
  1. উপন্যাস/
  2. হত্যাপুরী (১৯৭৯)/

হত্যাপুরী (১৯৭৯) - ১১

11 #

ফেলুদার আর ব্রেকফাস্ট খাওয়া হল না।

রেলওয়ে হোটেল থেকে টেলিফোনে পুলিশ খবর দিয়ে আমরা আমাদের হোটেলে চলে এলাম। ফেলুদা বলল যে ওর দু-একটা কাজ আছে, বিশেষ করে নুলিয়া বস্তিতে একবার যাওয়া দরকার, কাজেই ও একটু পরে ফিরবে। লাশ ছোঁয়াছুয়ি না করেই ও বলল যে, বাঝাই যাচ্ছে লোকটাকে মারা হয়েছে একটা ব্লান্ট ইনস্টুমেন্ট দিয়ে—যদিও সে ধরনের কোনও হাতিয়ার কাছাকাছির মধ্যে পেলাম না।

লালমোহনবাবু না জেনে মোক্ষম নাম দিয়েছিলেন বাড়িটার এটা স্বীকার করতেই হবে, যদিও পরে বলেছিলেন যে পুরী কথাটা বাড়ি অর্থে ব্যবহার করেননি। উনি মিন করেছিলেন পুরী শহর।তিন দিনের মধ্যে দু-দুটো খুন, হত্যাপুরী ছাড়া আর কী?

একটা সুখবর দিয়ে রাখি। দুর্গাগতিবাবুর সঙ্গে তাঁর ছেলের মিটমাট হয়ে গেছে। অন্তত দেখে তাই মনে হল। আমরা যখন ভুজঙ্গ নিবাস থেকে বেরোচ্ছি, তখন সাগরিকার দিকে চোখ পড়তে দেখি ছাতে দুজন লোক। বাপ আর ছেলে। শুধু তাই নয়, ছেলে আমাদের দিকে হাত নাড়লেন, কাজেই বুঝলাম খোশ মেজাজে আছেন। এটাও আমার কাছে কম রহস্য নয়।

ফেলুদা যখন ঘরে এসে ঢুকাল তখন পৌনে এগারোটা। আমার মনে পড়ে গেল নেপালে টেলিফোনের কথাটা। বললাম, কলটা পেয়েছিলে?

এই তো কথা বলে আসছি।

কলটা কি কাঠমাণ্ডুতে করেছিলে?

উঁহু, পাটন। কাঠমাণ্ডুর কাছেই বাঘমতী নদী পেরিয়ে একটা পুরনো শহর।

লালমোহনবাবু বললেন, যাই বলুন, লাশের কাছে ভূত কিছুই না। এখনও ভাবলে শিভারিং হচ্ছে।

সব শিভারিং খরচা করে ফেলবেন না, রাত্তিরের জন্য কিছু হাতে রাখবেন।

রাত্তিরে?

আমরা দুজনেই ফেলুদার দিকে চাইলাম। ও একটা ওমলেটের আধখানা মুখে পুরে দিয়ে বলল, এক পায়ে না হলেও, খাড়া থাকতে হবে আজ রাত্তিরে।

কোথায়? লালমোহনবাবু জিজ্ঞেস করলেন।

দেখতেই পাবেন।

কারণটা কী?

জানতেই পাবেন।

লালমোহনবাবু চুপসে গেলেন। অবিশ্যি এটা ওঁর কাছে নতুন কিছু না।

সেনাপতি দিব্যি স্মার্ট ডাক্তার, বলল ফেলুদা।

তুমি এর মধ্যে ডিসপেনসারি ঘুরে এলে?

ভদ্রলোক দুর্গ সেনের ট্ৰিটমেন্ট করেছেন সেটা জানলাম। এপ্রিলে আমেরিকা ঘুরে এসেছেন। ওষুধটা ওঁরই আনা।

ডায়াপিড?—নামটা মনে ছিল তাই জিজ্ঞেস করলাম।

তোর প্রশ্ন শুনে বুঝতে পারছি ওষুধটা তোর কোনও কাজে লাগবে না।

থানা থেকে ফোন এল পীনে বারোটায়। ডাক্তারের রিপোর্ট বলছে, নিশীথবাবু খুন হয়েছেন গতকাল সন্ধ্যা ছটা থেকে রাত আটটার মধ্যে, আর তাঁকে মারা হয়েছে কোনও ব্লান্ট ইনফ্লুমেন্ট দিয়ে। হাতিয়ার খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভুজঙ্গ নিবাসের বাইরে গেটের ধারেই মনে হয় খুনটা হয়েছে, তারপর মৃতদেহ টেনে নিয়ে ওই ঘরে ফেলে দেওয়া হয়, কারণ বারান্দার বালির নীচে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে।

আমি একটা জিনিস আন্দাজ করছি, যদিও ফেলুদাকে এ বিষয়ে কিছু বলিনি এখনও। যে লোক নিশীথবাবুকে খুন করেছিল, সে লোকই ফেলুদার মাথায় বাড়ি মেরেছে, আর একই অস্ত্ৰ দিয়ে। তাই ফেলুদার মাথায় রক্ত লেগে ছিল।

সাড়ে বারোটা নাগাত ভাবছি লাঞ্চটা সেরে নেওয়া যায় কি না, কারণ লালমোহনবাবু কিছুক্ষণ থেকেই বলছেন রান্নাঘর থেকে টেরিফিক পেঁয়াজ-রসুনের গন্ধ পাচ্ছেন, এমন সময় বিলাস মজুমদার এসে হাজির।

কী মশাই, যাবেন নাকি? ঘরে ঢুকেই ভদ্রলোকের প্রশ্ন।

কোথায়?—ফেলুদা বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে ওর খাতায় কী যেন লিখছিল।

টুরিস্ট ডিপার্টমেন্টের এয়ার-কন্ডিশন্ড লিমুজিন। ছ জনের জায়গা, মাত্র দুজন যাচ্ছি। আমি, আর একটি অ্যামেরিকান-নাম স্টেডম্যান। ভাবতে পারেন—এও ওয়াইল্ড লাইফ! কেওনঝরগড় যাচ্ছে। খুব মিশুকে। ভাল লাগত। আপনার।

কখন বেরোচ্ছেন?

লাঞ্চ খেয়েই।

না, থ্যাঙ্ক ইউ, বলল ফেলুদা, আমার একটু কাজ আছে। বরং আপনি যদি থেকে যেতেন তো পুরীর ওয়াইল্ড লাইফের কিছুটা নমুনা দেখে যেতে পারতেন।

নো, থ্যাঙ্ক ইউ, হেসে বললেন বিলাস মজুমদার।

ভদ্রলোক ঘর থেকে বেরোনোর মিনিট খানেকের মধ্যেই একটা ভারী অ্যামেরিকান গাড়ির শব্দ পেলাম। বুঝলাম গাড়িটা মুখ ঘুরিয়ে উত্তর দিকে চলে গেল।


শেষ কবে যে চাপা উত্তেজনার মধ্যে এতটা সময় কাটাতে হয়েছে তা ভেবে মনে করতে পারলাম না।

রাত্তিরের খাওয়া সারার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর দশটা নাগাত ফেলুদা বলল যে যাবার সময় হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এটাও বলে দিল যে যদিও ওর মন বলছে যে একটা কিছু ঘটতে পারে, পণ্ডশ্রম যে হবে না। এমন কোনও গ্যারান্টি নেই। —ফিটফটী স্মর্ট হয়ে নে। ওসব কুতর্গ পায়জামা চলবে না। সাদা জামা চলবে না। অন্ধকারে গা-ঢাকা দেবার জন্য কী পরতে হয় সেটা আশা করি আর বলে দিতে হবে না।

না। তার দরকার নেই। পার্ক স্ট্রিটের গোরস্থানেও আমাদের ঠিক এই কাজই করতে হয়েছিল।

হোটেল থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে দেখলাম তারা দেখা যাচ্ছে না। লালমোহনবাবু এমনিতেই ঘন ঘন আকাশের দিকে দেখেন, তবে সেটা তারা দেখার জন্য নয়, স্কাইল্যাবের চিহ্ন দেখার জন্য। আজ সমুদ্রের দিক থেকে প্রচণ্ড হাওয়া বইছে দেখে বললেন, হাওয়া উলটামুখো হলে টুকরোগুলো তাও সমুদ্রে পড়ার চান্স ছিল। এখন কিসু বলা যায় না।

ভুজঙ্গ নিবাসের চারিদিকে যদিও বালি, বিচটা কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় পঞ্চাশ-ষাট গজ পুবে। যেখানে বিচা শুরু হয়েছে সেখানে রেলওয়ে হোটেল থেকে যারা স্নান করতে আসে তাদের জন্য বাঁশের খুঁটির ওপর হাগলা দেওয়া কয়েকটি ছাউনি রয়েছে। তারই একটার পাশে এসে ফেলুদা থামল।

পশ্চিম দিকের আকাশটা শহরের আলোর জন্য খানিকটা ফিকে, আমাদের পিছনে সমুদ্রের দিকে গাঢ় অন্ধকার। সামনের দিকে লোক হেঁটে গেলে তাকে ছায়ামূর্তির মতো দেখা যাবে, কিন্তু চেনা যাবে না। সে লোক কিন্তু আমাদের দেখতেই পাবে না।

মনে মনে বললাম, মোক্ষম জায়গা বেছেছে ফেলুদা, যদিও কেন বেছেছে জানি না, জিজ্ঞেস করলেও কোনও উত্তর পাব না। ওর এই অভ্যোসটার জন্য লালমোহনবাবু একবার বলেছিলেন, আপনি মশাই সাসপেন্স ফিলিম তৈরি করুন। লোকে দেখে দিম ফেলতে পারবে না। কোথায় লাগে হচকিক্‌।

সাগরিকার তিনতলায় দুর্গাগতিবাবুর ঘরে এখনও আলো জ্বলছে; দোতলার আলো এইমাত্র নিভল। পাঁচিলের উপর দিয়ে লক্ষ্মণ ভট্টাচার্যের একতলার ঘরের জানালার একটি ফালি দেখা যাচ্ছে; বুঝতে পারছি সে ঘরে এখনও আলো জ্বলছে।

আমরা তিনজনেই ছাউনির তলায় বালির উপর বসেছি। কথা বলার কোনও প্রশ্নই ওঠে। না, আর বলতে হলেও গলা-না তুললে হাওয়ায় আর সমুদ্রের গর্জনে কথা হারিয়ে যাবে। চোখ খানিকটা সয়ে এসেছে। অন্ধকারে; ডাইনে চাইলে বেশ বুঝতে পারছি জটায়ুর কানের পাশের চুলগুলো বাতাসে মোরগের ঝুঁটির মতো খাড়া হয়ে উঠেছে। বাঁয়ে ফেলুদা; ও এইমাত্র বাঁ কবজিটা চোখের  কাছে এনে ওর রেডিয়াম-ডায়াল ঘড়িটাতে সময় দেখল। তারপর বুঝলাম ঝোলাতে হাত ঢুকিয়ে একটা জিনিস বার করে ওর চোখের সামনে ধরল।

ওর জাপানি বাইনোকুলার।

ফেলুদা কী দেখছে জানি।

দুৰ্গতি সেনকে দেখা যাচ্ছে ওঁর শোবার ঘরের জানালায়, কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দু পা বাঁয়ে সরে ডান হাত বাড়িয়ে কী জানি একটা তুললেন।

গেলাস।

কী খেলেন ভদ্রলোক গেলাস থেকে?

একতলার ঘরে বাতি এইমাত্র নিভে গেছে, এবার তিনতলার বাতি নিম্ভল, আর নিভতেই আমাদের আশেপাশের অন্ধকার যেন হঠাৎ আরও গাঢ় হয়ে গেল।

কিন্তু এখনও আমাদের মধ্যে কেউ নড়াচড়া করলে বেশ বুঝতে পারছি।

যেমন লালমোহনবাবু তাঁর পকেট থেকে টৰ্চটা বার করলেন।

কিন্তু কেন? কী মতলব ভদ্রলোকের?

আমি বুকে পড়ে ওঁর কানের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে বললাম, জ্বালাবেন না, খবরদার  ভদ্রলোক উত্তরে আমার কানে মুখ এনে বললেন, ব্লান্ট ইনস্ট্রুমেন্ট, হাতে থাক।

উনি মুখ সরিয়ে নেওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে একটা জিনিস দেখে আমার হৃৎপিণ্ডটা এক লাফে গলার কাছে চলে এল।

ইনে হাত দশেক দূরে আরেকটা হাগলার ছাউনি।

তার পাশে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে।

কখন এসেছে জানি না।

লালমোহনবাবুও দেখেছেন, কারণ ওঁর কাঁপা হাত থেকে টৰ্চটা ঝুপ শব্দ করে বালির উপর পড়ে গেল।

আর ফেলুদা?

ও দেখেনি।

ওর দৃষ্টি সোজা সাগরিকার দিকে।

আমিও জোর করে চোখ সেই দিকেই ঘোরালাম।

আর তাই বোধহয় ফেলুদার সঙ্গে সঙ্গেই লোকটাকে দেখতে পেলাম।

সাগরিকার দিক থেকে লোকটা আসছে আমাদের দিকে।

না, এই দিকে না। ভুজঙ্গ নিবাসের দিকে।

লোকটাকে চেনার কোনও উপায় নেই।

এগিয়ে এল। ওই তা ভুজঙ্গ নিবাসের গেটের থাম।

গেটের কাছাকাছি পৌঁছে লোকটা হাঁটার গতি কমাল, তারপর হাটা থামল।

এবারে আরেকটা লোক। এতক্ষণ দেখিনি। বোধহয় বাড়িটার আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিল।

দ্বিতীয় লোকটা প্ৰথম লোকটার দিকে এগিয়ে গেল।

গেটের সামনে এখন দুজন লোক।

এবার দুজনে ভাগ হল। যে সাগরিকার দিক থেকে এসেছিল সে আবার ফিরে—

সর্বনাশ! লালমোহনবাবুর অসাবধান আঙুলের চাপে ওঁর পাগলা টর্চ জ্বলে উঠেছে!

ফেলুদা এক থাপ্পড়ে টর্চটা বালিতে ফেলে দিল, আর সেই মুহূর্তে লালমোহনবাবুর চার ইঞ্চি ডাইনের বাঁশের খুঁটিটাতে কান-ফটানো শব্দের সঙ্গে একটা গুলি এসে লাগল।

তুই ওটাকে ধর।

ফেলুদা হাউইয়ের মতো লাফিয়ে উঠে ছুটে গেছে দ্বিতীয় লোকটাকে লক্ষ্য করে।

আশ্চর্য এই যে ওই একটা কথাতেই দেখলাম যে বিপদের তোয়াক্কা না করে আমিও নিঃশব্দে তীরবেগে ছুটতে শুরু করেছি। বালির উপর দিয়ে প্রথম লোকটাকে লক্ষ্য করে।

ফেলুদার আর আমার পথ ভাগ হয়ে গেল।

রাগবি খেলায় যেমন ফ্লাইং ট্যাকল করে একজন খেলোয়াড় আরেকজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে জাপটে ধরে, আমিও ঠিক সেই ভাবে অব্যৰ্থ লক্ষ্যে লোকটার পা দুটোকে জাপটে ধরলাম।

লোকটা হুমড়ি খেয়ে পড়ল বালির ওপর। আমি লোকটার পিঠে, আমার দৃষ্টি ঘুরে গেছে ফেলুদার দিকে।

একটা হাড়ে-হাড়ে সংঘর্ষের শব্দের সঙ্গে ফিকে আকাশের সামনে দেখলাম একটা ছায়ামূর্তি আরেকটা ছায়ামূর্তিকে ঘুঁসি মেরে ধরাশায়ী করল।

ইতিমধ্যে লালমোহনবাবু এসে পড়েছেন, এবং এসেই মহা বিক্রমে আমার হাতে বন্দি লোকটার মাথা লক্ষ্য করে তাঁর হাতের ব্লান্ট ইনস্টুমেন্টটা নিক্ষেপ করেছেন। একটা ভোঁতা শব্দে বোঝা গেল হাতিয়ার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এখন বালিতে লুটাপুটি খাচ্ছে।

ওকে নিয়ে আয় এদিকে।

আমরা দুজনে লোকটার দুই পা ধরে বালির উপর দিয়ে হেঁচড়ে টেনে নিয়ে গেলাম যেখানে রয়েছে ওরা দুজন। ফেলুদা দাঁড়ানো, অন্য লোকটি চিত, ফেলুদার একটা পা তার পেটের উপর, আর অন্যটা ডান হাতের তেলোর উপর–যে হাত থেকে রিভলভারটা আলগা হয়ে পড়ে আছে বালিতে।

আপনার থুতনিতে ক্ষতচিহ্ন ছিল না, কিন্তু আজ থেকে থাকবে।

আমার ওয়াইল্ড লাইফ কথাটা মনে পড়ল। অদ্ভূত হিংস্ৰ চেহারা নিয়ে টর্চের তীব্র আলোতে কপাল কুঁচকে ফেলুদার দিকে চেয়ে আছেন বিলাস মজুমদার, তাঁর বাঁ হাতে আঁকড়ানো রয়েছে লাল শালু দিয়ে মোড়া একটা পুঁথি।

ফেলুদা ঝুকে পড়ে এক ঝটিকায় পুঁথিটা ছিনিয়ে নিয়ে নিজের ঝোলার মধ্যে রেখে দিল।

তারপর ওর টর্চ ঘুরে গেল আমাদের বন্দির দিকে।

আপনার থার্ড আই কী বলছে লক্ষ্মণবাবু? শেষটায় এই ছিল আপনার কপালে?

অন্ধকার থেকে আরও লোক বেরিয়ে এসেছে।

আসুন মিঃ মহাপাত্র, ফেলুদা হাঁক দিল। —এঁদের দুজনকে তুলে দিচ্ছি। আপনাদের হাতে, তবে কাজ ফুরোয়নি। আমরা হত্যাপুরীর বৈঠকখানায় একটু বসব। এরা দুজনও থাকবেন।

চারজন কনস্টেবল এগিয়ে এসে বিলাসবাবু আর লক্ষ্মণবাবুকে তুলে নিল।

মহিমবাবু আছেন তো! ফেলুদা পিছনের অন্ধকারের দিকে ফিরে প্রশ্ন করল।

আছি বইকী।

অন্ধকার থেকে সেই রহস্যজনক চতুর্থ ব্যক্তি বেরিয়ে এলেন। —বাবাও এসে পড়লেন বলে। ওই যে টর্চের আলো।

কোনও চিন্তা নেই, বললেন, মিঃ মহাপাত্র, মোড়া এনে রাখা হয়েছে। ঘরে—সবাই বসতে পারবেন।

লালমোহনবাবুর বাইরেই তো বেশ– কথাটা কারুর কানে গেল কি না জানি না, কারণ সবাই রওনা দিয়েছে ভুজঙ্গ নিবাসের দিকে।